“শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ” শ্লোগানটি সামনে রেখে ২০২১ সালের মধ্যে সরকার সারা বাংলাদেশের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌছে দেওয়ার লক্ষ্যে বদ্ধ পরিকর। উৎপাদিত বিদ্যুতের সদ্বব্যবহার ও অপচয় রোধ তথা স্বয়ংক্রিয় বিলিং সুবিধা সৃষ্টি করার জন্য ২০১১ সালে গণ-প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রি-পেমেন্ট মিটার প্রবর্তন করেন। বর্তমানে প্রি-পেমেন্ট মিটারসমূহ আরো আধুনিকায়ন করে ২০২৫ সালের মধ্যে ২.০ কোটি প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর ভৌগলিক এলাকায় প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপন/প্রতিস্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপন/প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে সম্মানিত গ্রাহক সদস্যগণ নিম্নবর্ণিত সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
১। প্রি-পেমেন্ট মিটারের গ্রাহক সদস্যগণ তাদের বিদ্যুৎ বিলের উপর ১% ডিস্কাউন্ট পাবেন।
২। প্রি-পেমেন্ট মিটারের মাধ্যমে নতুন সংযোগ প্রদান এবং লোড বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নিরাপত্তা জামানত গ্রহণ করা হবে না।
৩। প্রি-পেমেন্ট মিটারের ক্ষেত্রে বিল দেয়ার জন্য অতিরিক্ত ঝামেলা পোহাতে হবে না। পর্যায়ক্রমে নিজের মোবাইল দ্বারা ঘরে বসে বিল পরিশোধ করতে পারবেন।
৪। বিদ্যুৎ বিল বকেয়া হবে না, ফলে লাইন কাটার টেনশন থাকবে না এবং অতিরিক্ত ডিসি/আরসি ফি ১২০০ টাকা এবং ৫% এলপিসি লাগবে না।
৫। যেকোন সময়ে গ্রাহক দেখতে পারবেন তার কত বিদ্যুৎ খরচ হয়েছে আর কত টাকা অবশিষ্ট আছে।
৬। প্রি-পেমেন্ট মিটার ব্যবহারে অযথা ভোল্টেজ উঠা-নামার ফলে বাসার বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির উপর প্রভাব পড়বে না।
৭। ভুল মিটার রিডিং এর কারণে অতিরিক্ত ভোতিক বিল প্রদানের কোন ঝামেলা নাই। গ্রাহকের বিদ্যুৎ ব্যবহার অনুযায়ী মিটার থেকে টাকা কাটা হবে।
৮। অনেক সময় মালিকানা ঝামেলায় বিল জমা রেখে অন্যের উপর দায় চাপিয়ে দেন, প্রি-পেমেন্ট মিটারের সেই সুযোগ থাকবে না।
৯। গ্রাহকের অসুবিধার কথা চিন্তা করে সাপ্তাহিক ছুটির দিন, অন্যান্য বিশেষ ছুটির দিন ও ফ্রেন্ডলি আওয়ারে (বিকাল ৪ টা থেকে পরের দিন সকাল ১০ টা পর্যন্ত) মিটারে টাকা না থাকলেও মিটার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করবে না। এই সময় মিটার ক্রেডিটে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে।
প্রিপেইড মিটার সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর:
ক) প্রিপেইড মিটারে পোস্ট-পেইড মিটারের চেয়ে বিল কি কম/বেশি আসে?
উত্তরঃ না। প্রিপেইড মিটারে পোস্ট-পেইড মিটারের সমান পরিমানে বিল হবে। পোস্ট-পেইড মিটারের বিল প্রতি ইউনিটের জন্য যেই মূল্যে হিসেব করা হয়, সেই মূল্য তালিকা প্রিপেইড মিটারের মেমোরিতে দেওয়া আছে। তাই দুই প্রকারের মিটারেই বিদ্যুৎ বিল সমান হবে। কম/বেশি হওয়ার সুযোগ নাই।
খ) এক এরিয়ার গ্রাহক অন্য এরিয়ার মিটার রিচার্জ করতে পারবে কিনা?
উত্তরঃ ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর যে কোন এরিয়ার গ্রাহক ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর ভৌগলিক এরিয়ার মধ্যে যেখানে প্রি-পেইড মিটার রিচার্জ করার ব্যবস্থা আছে সেখানে রিচার্জ করতে পারবে।
গ) কার্ড নষ্ট অথবা হারিয়ে গেলে করনীয় কি?
উত্তরঃ কার্ড নষ্ট অথবা হারিয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।
ঘ) এক মিটারের টোকেন দিয়ে অন্য মিটার রিচার্জ করা যাবে কি?
উত্তরঃ এক মিটারের টোকেন দিয়ে অন্য মিটার রিচার্জ করা যাবে না। কারণ প্রতিটি টোকেন একটি নির্দিষ্ট মিটারের সাথে সংযুক্ত করা আছে। টোকেনসমূহ যেই মিটারের শুধূমাত্র সেই মিটারটি এই টোকেন দিয়ে চার্জ করা যাবে।
ঙ) মিটারে অথবা রিচার্জে সমস্যা দেখা দিলে কোথায় যোগাযোগ করব?
উত্তরঃ মিটার অথবা রিচার্জে সমস্যা দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।
চ) রিচার্জ করে মিটার চার্জ না করে রেখে দিলে ব্যালেন্স কি চলে যায়?
উত্তরঃ রিচার্জ করে মিটারে চার্জ না করে টোকেন সংরক্ষণ করে রেখে দিলে কোন সমস্যা নেই। পরবর্তীতে যে কোন সময় টোকেন মিটারে প্রবেশ করালে একই পরিমাণ টাকা রিচার্জ হবে।
ছ) এক মাসে একের অধিক রিচার্জ করলে কি প্রতিবারই ডিমান্ড চার্জ ও মিটার ভাড়া কাটবে?
উত্তরঃ না। যেকোন মাসে প্রথমবার রিচার্জ করার সময় এই মাসের ডিমান্ড চার্জ ও মিটার ভাড়া কাটবে এবং যদি পূর্বের কোন মাসের ডিমান্ড চার্জ ও মিটার ভাড়া বকেয়া থাবে তবে সেই চার্জ কাটবে। এরপর একই মাসের পরবর্তী যেকোন রিচার্জে ডিমান্ড চার্জ ও মিটার ভাড়া কাটা হবে না।
জ) রাতের বেলা অথবা যেকোন ছুটির দিনে মিটারের ব্যালেন্স শেষ হয়ে গেলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হবে কি?
উত্তরঃ রাতের বেলা অথবা যে কোন ছুটির দিনে মিটারের ব্যালেন্স শেষ হয়ে গেলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হবে না। মিটারে এই সময়টা ফ্রেন্ডলী আওয়ার হিসেবে উল্লেখ করা আছে। এই সময় যে পরিমান বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হবে মিটার তা নেগেটিভ হিসেবে জমা রাখবে এবং পরবর্তীতে মিটার রিচার্জ করা হলে ব্যালেন্স থেকে কেটে নিবে।
ঝ) Over Load এর কারেন মিটার বন্ধ হলে তা কিভাবে জানা যাবে এবং তখন করনীয় কি?
উত্তরঃ Over Load এর কারণে মিটার বন্ধ হওয়ার পূর্বে এলার্ম দিবে এবং Load কমানো না হলে মিটারটি কিছু সময় পর পর পাঁচবার ট্রিপ করবে তারপরও যদি Load কমানো না হয় তাহলে মিটারটি ৩০ মিনিটের জন্য অফ হয়ে যাবে। ৩০ মিনিট পর Load কমানো না হলে মিটারটি পুনরায় পূর্বের মত এলার্ম দিবে। এ ক্ষেত্রে লোড বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।
ঞ) কোথায় থেকে ভেন্ডিং করবো?
উত্তরঃ সদর দপ্তর/জোনাল অফিস/সাব-জোনাল অফিসের নিজস্ব ভেন্ডিং স্টেশন, বিভিন্ন ব্যাংক এর ভেন্ডিং স্টেশন এবং মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপের মাধ্যমে মিটার রিচার্জ করা যাবে।
ট) প্রি-পেইড মিটার নষ্ট হলে এবং লাগানোর খরচ কে দেবে?
উত্তরঃ গ্রাহক প্রান্তে স্থাপিত এনালগ/ডিজিটাল মিটার সমিতির নিজস্ব অর্থায়নে প্রিপেইড মিটার দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হবে। তাছাড়া প্রাকৃতিক কারনে মিটার নষ্ট হলে অবশিষ্ট ব্যালেন্স সমন্বয় সহ মিটার বিনা মুল্যে দেওয়া হবে।
ঠ) মিটার কিভাবে রিচার্জ করা যাবে?
উত্তরঃ মিটার রিচার্জ করার জন্য প্রিপেইড মিটার অপারেশনাল ম্যানুয়াল সরবরাহ করা হবে। ম্যানুয়ালের নির্দেশনা অনুযায়ী মিটার রিচার্জ করা যাবে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস